গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতে একদিন।



অনবদ্য সুন্দর গুলিয়াখালীকে সাজাতে প্রকৃতি কোনও প্রয়াস ছাড়েনি। দিগন্তের সমুদ্রের জল এবং অন্যদিকে কেওড়া বন এই সৈকতটিকে অনন্য করে তুলেছে। কেওড়া গাছের শিকড় কেওড়া বনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খালের চারপাশে দেখা যায় যা বনটি সমুদ্রের মধ্যে চলে গেছে। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলায় অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুণ্ড বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে স্থানীয়দের কাছে ‘মুরাদপুর বিচ’ নামে পরিচিত।

সেখানে সাগরপাড়ের সবুজের ভুবন, বালু নেই। পা ফেলতেই কাদামাখা মাটির আস্তরণে নরম ঘাসের রাজত্ব। দুই দিকে কেওড়া বন। সেই বনের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটি খাল। খালের পাশ ধরে সামনে দেখা যাবে বিশাল জলরাশি আর তার ঢেউ। আছড়ে পড়ছে একেবারে তীরে—সবুজ ঘাসের ওপর। তবে গর্জন কম। কিছুটা আটপৌরে এখনো। দেখে মনে হবে, লজ্জা কাটেনি তার।




এখানে উপভোগ করা যায় সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মতো পরিবেশ। সাগরের সবুজ ঘাসের উন্মুক্ত প্রান্তর নিশ্চিতভাবেই আপনার চোখ জুড়াবে। সমুদ্র সৈকতের পাশে সবুজ ঘাসের এই মাঠে প্রাকৃতিক ভাবেই জেগে উঠেছে আঁকা বাঁকা নালা। এইসব নালায় জোয়ারের সময় পানি ভরে উঠে। চারপাশে সবুজ ঘাস আর তারই মধ্যে ছোট ছোট নালায় পানি পূর্ণ এই দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে।

একদিকে দিগন্তজোড়া সাগরের জলরাশি, অন্যদিকে রয়েছে কেওড়া বন। এই দুই মিলে গুলিয়াখালির পরিবেশকে করেছে অনন্য। কিছুদিন আগেও গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত মানুষের কাছে পরিচিত ছিল না। তাই পুরো পরিবেশ ছিল নিরিবিলি। এখন অনেকেই এখানে বেড়াতে যায়। তবে গুলিয়াখালীতে গেলে অবশ্যই দল বেধে যাওয়া ভালো।

গুলিয়াখালীতে বেড়াতে গেলে এর আশেপাশের পর্যটন স্থানগুলোও ঘুরে দেখে আসতে পারেন। গুলিয়াখালীর আশেপাশের স্থান গুলোর মধ্যে আছে, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, ঝরঝরি ঝর্না, কমলদহ ঝর্ণা, কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট, মহামায়া লেক, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা ইত্যাদি।


কিভাবে যাবেন?

চট্রগ্রামের অলংকার মোড়, এঁকে খান মোড়, কদমতলী থেকে সীতাকুণ্ড যাবার বাস ও মেক্সি পাওয়া যায়। পছন্দ মতো জায়গা থেকে চলে আসতে পারবেন সীতাকুণ্ড বাজারে।

সীতাকুন্ডের বাস স্ট্যান্ড ব্রীজের নিচ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত জনপ্রতি অটো ভাড়া নিবে ৩০ টাকা, আর অটো রিজার্ভ নিয়ে যেতে চাইলে ভাড়া লাগবে ১৫০-২০০ টাকা। ভাড়ার পরিমাণ অবশ্যই দরদাম করে ঠিক করবেন। সীতাকুণ্ড ফিরে আসার জন্যে আগে থেকেই সিএনজি চালকের নাম্বার নিয়ে রাখতে পারেন। অথবা যাওয়া আসা সহ রিজার্ভ করে নিতে পারেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফিরে আসার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।



সতর্কতা
  • খাবারের প্যাকেটসহ কোনো প্লাস্টিক পণ্য যেখানে-সেখানে ফেলবেন না।
  • জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিন স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে।
  • সন্ধ্যার পর সৈকতে অবস্থান করবেন না।


Comments